Print This Publication

মধ্যরাতের কবিতা, একটি আষাঢ়ে সনেট, বন্দুক, ভুলের দরজা খুলে—বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়

মধ্যরাতের কবিতা


মধ্যরাতের কবিতা তোমার

     শরীর কখনও

         আঢাকা দেখিনি।


কাল সারারাত বৃষ্টি পড়েনি

    'এই শুভাঙ্গি' বলে কে ডাকল।


তারপর শুধু কমা, ফুলস্টপ

     শব্দেরা খোঁজে পান্থনিবাস

         হলুদবর্ণ অধুনা অচল

      লারপোজ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল..


দুই চার তিন সাড়ে তিন পাঁচ

   মধ্যরাতের কবিতা তোমার

      আদরের দাগ, শীৎকার ধ্বনি

পাতায় পাতায় হেমন্ত শ্লোক

    খর্বুটে ঠোঁট,খুলি, নাক চোখ

লিরিক কুমার যে তোমার নয়

    যারা ভেবেছিল এভাবেই হয়


         নীলতরঙ্গ । কীটপতঙ্গ।


কাল সারারাত কিছুই দেখিনি

     পাতার পোশাক

    ‌ এসেছেন তিনি?

এস করি পাপ এবং পূণ্য..


     তিন চার আট সাত ছয় পাঁচ

   ‌ সাড়ে তিন দুই এবং শূন্য...


© বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়


একটি আষাঢ়ে সনেট


পুরনো বাড়ির থেকে নতুন ঘরের দিকে গিয়ে

দেখি এক রঙচটা সাইকেল, তালাবন্ধ খাম

মাইল মাইল পথ, প্রতিশ্রুতি পেরিয়ে এলাম

একটি নিষ্পাপ সিঁড়ি মধ্যরাতে গোপনে ডিঙিয়ে...


তুমি তুই আপনিরা মুন্ডহীন দুয়ারে দাঁড়ায়

সেই কবে উঁকি দিয়েছিল কোন সুবোধ বালক 

রক্তহীন চোখ তুলে প্রশ্ন করে,তুই সেই লোক?

সারা গায়ে ফেনা লেগে,অকস্মাৎ দরজা খুলে যায়


হাওয়ার ভিতরে মেঘ পুঞ্জীভূত কুয়াশা যখন

অশরীরী খিলখিল হেসে ওঠে,ওদিকে তাকান

অসম্মতি নিমরাজি বুকে পিঠে নিরীহ সাবান

তারপর,বলো বলো, আষাঢ়স্য এটাই প্রথম?


আষাঢ় বিদ্যুৎলতা, ফিরে আসে বন্দরের গান

নিষিদ্ধ ছাদের ঘরে আমাদের সমবেত স্নান।


© বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়


বন্দুক


টেক্সাসের একটি স্কুলে বন্দুকধারী এক কিশোরের তান্ডবের পর...


বাইডেন ক্ষুব্ধ, কিন্তু নিরুপায়।সেনেটে সংখ্যালঘু তার দল,'গান লবি' অটুট!

বন্দুক চলছে চলবে। যত লোক তার চেয়ে বেশি বন্দুক। না, বিপ্লব টিপ্লব নয়। নিছক ব্যবসা। শিশুদের ভবিষ্যৎ?ঘুনপোকাদের ভবিতব্য?

একটা ১২ লাইনের কবিতার কতটুকু ক্ষমতা!


অমলকান্তি হতে চায় রোদ্দুর

ওখানে এখন সবুজের মরশুম

ছেলেটির হাতে তার প্রিয় বন্দুক

মাথার ভেতর পোকাদের গুনগুন।


পরদিন ভোরে ঠাকুমাকে গুলি করে

প্রতিবেশি স্কুলে ঢুকে পড়ে তার ত্রাস

কী হবে এবার? মিডিয়া বাকিটা জানে

কুড়িটা বাচ্চা, দিদিমণিদের লাশ।


অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চায়

ঘুনপোকাদের বন্দুক চাই, ফের

পৃথিবী অবাক, সেনেট বলেছে, না না

বন্দুকে আছে অধিকার, সকলের...


© বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়


ভুলের দরজা খুলে


ঘুমোতে যাওয়ার আগে নিজেকেই প্রশ্ন করি, 

যা ভেবেছি ভুল না সঠিক?

তারপর, জল না খেয়েই পর্দা টেনে দিই।


স্বপ্ন এক আজব উড়ান।

জীবিতে ও মৃতে কোনো তফাৎ করে না।


জেগে উঠে দেখি পৃথিবী দর্শকশূন্য।

রেলিঙে হেলান দিয়ে আর কেউ প্রতীক্ষায় নেই।


এখনও দেখিনি,তবে রুদ্রাণী বলেছে

স্বপ্নে দেখা (নীল চোখ,ঘোর কালো) বিড়ালটি নিচে বসে আছে।


© বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়




Comments